চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সালিশে কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য ২ লাখ টাকা

চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সালিশে কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য ২ লাখ টাকা

 

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় (১৪) বছরের এক কিশোরীর গোসলের আপত্তিকর ছবি তুলে সে ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে তোফাজ্জল (২৮) নামে এক ওমান প্রবাসীর বিরুদ্ধে।

এ নিয়ে নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে শনিবার চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে সামাজিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করতে গিয়ে সালিশে কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য নির্ধারণ করা হয় দুই লাখ টাকা। অভিযুক্তকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও কিশোরীর বিয়ের খরচ বহনের শাস্তি প্রদান করা হয়।

ঘটনাটি উপজেলার কামাল্লা ইউনিয়নের কামাল্লা গ্রামের। ধর্ষণে অভিযুক্ত তোফাজ্জল হোসেন (২৮) উপজেলার কামাল্লা গ্রামের মৃত শিরু মোল্লার ছেলে।

ভুক্তভোগী কিশোরীর অভিযোগ, কিছুদিন আগে গোসলখানায় গোসল করার সময় তোফাজ্জল লুকিয়ে আমার ছবি তোলে। তোফাজ্জল ওই গোসলের ছবি দেখিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে বলে, তা না হলে ছবিগুলো বিভিন্ন লোকজনের কাছে ছড়িয়ে দেবে বলে আমাকে প্রথমবার ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ঘটনাও ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও ফেইসবুকে ছড়ানোর কথা বলে আমাকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে।

কিশোরীর বাবা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, আমি শনিবার (২৯ জানুয়ারি) কাজে গিয়েছিলাম বাড়ি ফিরে লোকজনের মুখে এ খবর শুনি। আমাকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে স্থানীয়ভাবে আপোষ মীমাংসার কথা বলে ইউপি সদস্য জামাল। সে আরো বলে, ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনের পর স্থানীয়ভাবে এটি মীমাংসা করা হবে। অন্যথায় ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে মেয়ের বিয়ে দিতে পারবে না বলেও ভয় দেখায়। আমি গরিব মানুষ, আইন-আদালত বুঝি না। তাই আপোষ মীমাংসার জন্য রাজি হয়েছি।

ইউপি সদস্য জামাল ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ঘটনাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় মেয়েটির ভবিষ্যৎতের কথা চিন্তা করে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সামাজিকভাবে কামাল্লা ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানের বাড়িতে মীমাংসা করা হয়। এ সময় তোফাজ্জলকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং ভোক্তভোগী মেয়ের বিয়েতে তোফাজ্জল আংশিক কিছু খরচ দিবে বলে ঠিক করা হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার খাঁন বলেন, এলাকার লোকজন আমার বাড়িতে দু’পক্ষকে নিয়ে এসে বিচার করেছেন। এলাকার গণ্যমান্য লোকজন উপস্থিত থেকে বিচার করেছেন।

এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাশিম বলেন, ধর্ষণের বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারপরও খোঁজখবর নিচ্ছি, ঘটনা যদি সত্য হয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন